লেখাটি, ফেসবুকে একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে লিখেছি। আমি এই লেখাটি বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন করে, ওই স্ট্যাটাসের প্রতি-মন্তব্যের গন্ডির বাইরে এনে, স্বকীয় রূপ দিতে চাই। তাই আমার ব্লগে নিয়ে আসলাম।
সাগীর, আমার বা অঙ্কুরের নিকট প্রভাত (এবং অন্যান্য) কিবোর্ড লেআউট ব্যবহারকারী পরিসংখ্যান নেই। আমার জানামতে ওমিক্রনল্যাব, একুশে বা অন্য কারো নিকটও এজাতীয় পরিসংখ্যান নেই।
তবে একটি অনুমাননির্ভর এবং আপেক্ষিক চিত্র হল – দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন জনপ্রিয় লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন এরা সাথে প্রভাত ও জাতীয় কিবোর্ড লেআউট দেওয়া হয়ে থাকে। একুশে সাইট হতেও প্রভাত ও অন্যান্য লেআউট ডাউনলোড হয়ে থাকে। অঙ্কুরের শিশির ডিভিডি এর সাথেও প্রভাত যায়। অভ্র এর সাথেও প্রভাত যায়। তবে কতজন ব্যবহার করে, বলা মুশকিল।
অভ্র ফোনেটিক্স তুলে নেওয়া উচিত হবে না। একান্ত ব্যক্তিগত মতামত জেনারালাইজ না করাই উত্তম। এই অভ্র ফোনেটিক্স ব্যবহার করে অগণিত মানুষ বাংলা লিখতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, আপনার বক্তব্যের অন্য অংশ – “আমি আমার নিজের ভাষা লিখবো আরেক ভাষার বর্ণ দিয়ে!! এটা মোটেই ভালো কাজ না” – আলোচনাযোগ্য। অনেকেই এই মতটি সমর্থন করেন। তাদের যুক্তি হচ্ছে, “এতে করে বাংলা ভাষার অক্ষর ডিজিটাল ব্যবস্থায় বিলুপ্তির দিকে ধাবিত হতে পারে। এবং একটা সময় এটিকে প্রমিত করে নিতে বাধ্য হতে হবে। যেমনটি হয়েছে মালয়শিয়ায়।”
১৯৫২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের একজন অধ্যাপক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ভাষা পরিবর্তনশীল। আমি মনে করি এই পরিবর্তনের রূপ, ত্বরণ ও ফলাফল নির্ভর করে ভাষা ব্যবহারকারীর প্রয়োগের মাধ্যম কি তার উপর। ভাষা যখন শুধু মুখে উচ্চারিত হত, তখন বিভিন্ন জনপদের বিভিন্ন অনুঘটকের প্রভাবে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্নতা পেয়েছে। লেখা আবিস্কারের পর সেটি ভিন্ন মাত্রা নিয়েছিল। আরও পরে ছাপার অক্ষর ভাষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। আর এখন ডিজিটাল যুগে পরিবর্তনের মাত্রা, ব্যাপকতা, ত্বরণ হয়েছে লাগামহীন। অনেকেই মনে করবেন, চেষ্টা করবেন এই লাগাম টেনে ধরার। কিন্তু পরিবর্তন প্রাকৃতিক ও অবশ্যম্ভাবী।