নোট: এটি আমার লেখা নয়। মোজিলা‘র Rob Hawkes এর লেখা There is something magical about Firefox OS ব্লগের অনুবাদ মাত্র। অঙ্কুরের লোকালাইজেশন দলের সদস্যগণ অনুবাদ করেছেন। আমি সম্পাদনা করে ধাপে ধাপে এখানে তা প্রকাশ করছি।
পরিষ্কার ভাষায় বলতে গেলে;ফায়ারফক্স ওএস একটি বিশাল সম্ভাবনার সূচনা। একটি অপেক্ষমান বিপ্লব। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির নির্মল বাতাসে নিশ্বাস। ক্ষুরধার প্রযুক্তির বহু প্রতিক্ষীত ফল। যাদুকরী এই প্রযুক্তি সবকিছুর পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।

ফায়ারফক্স ওএস কী?
যারা একটু অবাক হচ্ছেন এই ভেবে, আসলে আমি কি বলতে চাইছি, তাদের জন্য সহজ কথায় জলদি করে বলতে গেলে
ফায়ারফক্স ওএস হচ্ছে নতুন একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যা ডেভেলপ করেছে, মোজিলার Boot to Gecko (B2G) প্রকল্প। এটি লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করে থাকে এবং গেকো ভিত্তিক রানটাইম ইঞ্জিনে বুট হয়, যা ব্যবহারকারীকে পুরোপুরি HTML, JavaScript, এবং অন্যান্য মুক্ত ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন এপিআই দ্বারা ডেভেলপকৃত অ্যাপ্লিকেশন চালাতে সহায়তা করে।– মোজিলা ডেভলপার নেটওয়ার্ক।
অল্প কথায়, ফায়ারফক্স ওএস ওয়েবের অভ্যন্তরীন প্রযুক্তি, যেমন জাভা স্ক্রিপ্ট – ব্যবহার করে;একটি সম্পূর্ণ মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম তৈরী করেছে। জটিল চিন্তা বাদ দিয়ে, শুধু এক মুহুর্তের জন্য ভাবুন – এটি একটি মোবাইল ওএস পাওয়ার্ড বাই জাভাস্ক্রিপ্ট!
এই কাজটি করার জন্য, গেকোর (ফায়ারফক্সের অভ্যন্তরীন ইঞ্জিন) কিছুটা–পরিবর্তিত সংস্করণ তৈরী করা হয়েছে, আনা হয়েছে প্রয়োজনীয় নতুন জাভাস্ক্রিপ্ট API, যা মোবাইল ফোনের মত অনুভূতি দিতে প্রয়োজন ছিলো। যাতে অন্তর্ভুক্ত আছে, ফোন করার জন্য ওয়েবটেলিফোনি, ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর জন্য রয়েছে ওয়েবএসএমএস আর ব্যবহারকারীর শরীরে ঝাঁকুনি দিতে রয়েছে, অত্যাবশ্যকীয় ভাইব্রেশন API।
তবে, ফায়ারফক্স ওএস – সাম্প্রতিক ওয়েব প্রযুক্তির ইচ্ছেমতো ব্যবহারের চেয়েও বেশী কিছু।চমৎকার উপায়ে মোজিলার অন্যান্য আরও অনেক প্রকল্পের সমাহার করা হয়েছে, একটি একক অস্তিত্বে – ওয়েবকে একটি প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে। উল্লেখযোগ্য অন্তর্ভুক্তির মধ্যে রয়েছে, আমাদের ওপেন ওয়েব এপস্ উদ্যোগ এবং পারসোনা যাওয়েবে পরিচিতি ও লগইন এর এক অনন্য সমাধান (পূর্বে যা ব্রাউজার আইডি–BrowserID নামে পরিচিত ছিল)। মোজিলার ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্প একত্রিত করে একটি একক সুগঠিত প্লাটফর্ম তৈরী হতে দেখা, নিশ্চিতরূপেই চিত্তাকর্ষক।
আমি এখানেই এর বর্ণনা শেষ করছি, বিস্তারিত ভাবে এই প্রকল্পের বিবরণ দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয়।মোজিলা ডেভেলপার নেটওয়ার্কে ফায়ারফক্স ওএস পাতায় খানে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে, আমি অবশ্যই আপনাকে তা পড়ে দেখতে অনুরোধ করব।
কেন ফায়ারফক্স ওএস
আপনি হয়ত ভাবছেন, “আচ্ছা বুঝলাম, কিন্তু একটি ফোন তৈরীতে কেন জাভা স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করা হল?” আপনার ভাবনা হয়ত সঠিক, আসলেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সুখবরটি হল যে, বেশ অনেকগুলো কারণ রয়েছে এই ধারণাটির পিছনে।
দুটি প্রধান কারণের একটি হল বর্তমান প্রোপাইটরি প্রযুক্তি আর অন্যটি হচ্ছে শৃঙ্খলিত মোবাইল প্রযুক্তি। এই দুইয়ে মিলে মোবাইল মার্কেটে তৈরী করেছে এক শূন্যতার, ফায়ারফক্স ওএস মার্কেটের ওই শূন্যস্থান পূরণ করবে।
মোবাইল বাজারে একটি শূন্যস্থানের সমাপ্তি
এটি কারো কাছে বিষ্ময়কর নয় যে স্মার্টফোন অনেক সময়ই অসম্ভব দামী হয়, এমনকি বিশ্বের যে সমস্ত এলাকায় উচ্চ স্তরের আয় আছে সেখানেও। কিন্তু আপনি যদি চিন্তা করেন যে, যেসকল দেশের সামর্থ্য আছে তাদের জন্য সেগুলো ব্যয়বহুল। তাহলে,একটি মুহূর্ত জন্য বিবেচনা করুন একটি ১৬ গিগা আইফোন ফোর এস, যা ৬১৫ পাউন্ডের সমান, ব্রাজিলের মত একটি উন্নয়নশীল বাজারে – যা যুক্তরাজ্য থেকে ১০০ পাউন্ড বেশী ব্যয়বহুল!
যদিও, ব্রাজিলের ঐ স্ফীত দাম ইম্পোর্ট ট্যাক্স উচ্চ হারের কারণে হয়ে থাকতে পারে। এই ঝক্কি এড়াতে, এ্যাপেল কাজ করে যাচ্ছে, তারা স্থানীয় উৎপাদনের বিষয়ে ভাবছে। যাই হোক, এতে একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ব্যয়বহুল এবং হাই এন্ড ডিভাইস বিশ্বের সব অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়। কোন কোন স্থানে আপনি নিশ্চয়ই ছোটখাট একটি গাড়ীর সমান দামের ব্রান্ড ফোন নিয়ে জনারণ্যে ঘুরতে চাইবেন না।
সুতরাং আপনি কি করবেন, যদি আপনি অঢেল টাকা খরচ ব্যতিত, একটি স্মার্টফোনের স্বাদ নিতে চান? আপনি হয়ত একটি সস্তা এনড্রয়েড ডিভাইস নিতে চাইবেন, যা চলে – কিন্তু খুবই দুর্বলভাবে চলে।
সৌভাগ্যবশত, এখানেই কবি সরব – এসে গেছে ফায়ারফক্স…
ফায়ারফক্স ওএস এর লক্ষ্য উচ্চস্তরের ডিভাইসের সাথে প্রতিযোগিতা করা নয়। এটি, সাধারণ ফোনের মূল্যে, মধ্য–স্তরের একটি স্মার্টফোন অফার করতে চাইছে। – বনি চা
(translator note: উপরের অংশ প্রথম কিস্তি ছিলো)
ফায়ারফক্স ওএস বাজারের ঠিক এই ব্যবধানটিই হ্রাস করবে। একটি মধ্যম মানের হার্ডওয়্যারে অ্যানড্রয়েড ব্যবহারের যে অনুভুতি আপনি পান তা ফায়ারফক্স ওএস আপনাকে দিবে সস্তা ও লো–এন্ড হার্ডওয়্যারে। এটি কোন কৌতুক নয়।
উদাহরণ হিসেবে, আমি একটি ৫০ পাউন্ডের ডিভাইসে (নিশ্চিতরূপেই, একটি কম দামী যন্ত্র) ফায়ারফক্স ওএস এর অধীনে, একটি জাভাস্ক্রিপ্ট গেম চালিয়ে পরীক্ষা করছি। আপনি হয়ত ভাববেন, এটি হয়ত খুবই খারাপ পারফরমেন্স ও ধীরে চলছে। মোটেও না, বরং ওই একই ডিভাইসে অ্যানড্রয়েডের অধীনে যেকোন ব্রাউজার (ফায়ারফক্স কিংবা ক্রোম) হতে অনেক বেশী দ্রুত চলছে। শুধু তাই নয় ৪ হতে ৫ গুন দামী এনড্রয়েড ডিভাইসের ব্রাউজারে একই গেম থেকে আমার কাম দামী ডিভাইসে ফায়ারফক্স ওএস এ বেশী দ্রুত চলছে।
কেন একই রকম ডিভাইসে, অ্যানড্রয়েড এর ব্রাউজার হতে এত বেশি দক্ষতা? কারণ, ফায়ারফক্স ওএস এ – Gecko এবং হার্ডওয়্যারের মধ্যে অনাকাঙ্খিত জিনিসের ঘাটতি, মানে জাভাস্ক্রিপ্টের মত জিনিসগুলো পরিপূর্ণভাবে চলতে পারে। ওই ঘাটতিতে থাকা জিনিসগুলো জাভাস্ক্রিপ্টকে অনেক ধীর করে দেয়।
সস্তা হার্ডওয়্যারে জাভাস্ক্রিপ্ট এর এই কর্মক্ষমতা হল অন্যতম বিষয়, যার কারণে আমি মেনে নিয়েছে যে ফায়ারফক্স ওএস বিশাল কিছু শুরু করেছে।
আমার বলে দেওয়া উচিৎ যে মোজিলা ৫০ পাউন্ডের একটি ডিভাইস দিয়ে ফায়ারফক্স ওএস লঞ্চ করতে যাচ্ছে না, এটি শুধুমাত্র একটি নমুনা যন্ত্র, যা আমরা বর্তমানে উন্নয়ন এবং পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করছি।
একটি বিকল্প, উন্মুক্ত প্লাটফর্ম
কেন ফায়ারফক্স ওএস? এর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, এটি যে শুধুই একটি বিকল্প মুক্ত মোবাইল প্লাটফর্ম হিসেব আসছে তা নয়। বরং বড় বড় প্রোপাইটরি মোবাইলের দিকপালদের, এই শিল্পে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে প্রভাবিত করতে সহায়ক হবে।
মোজিলা‘র মিশন ১৯৯৮ সালে আরম্ভ হয়, একটি সফটওয়্যার প্রজেক্ট হিসেবে, পরবর্তীতে একটি ফাউন্ডেশন ও কোম্পানী হিসেবে এর রূপান্তর হয়েছিলো, যা প্রতাপশালী কর্পোরেট পণ্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে – উন্নয়ন করে যাচ্ছে উন্মুক্ত প্রযুক্তির। – স্টিভ লর
মজিলা চেষ্টা করছে, ফায়ারফক্স এর সাথে তার সফলতার অনুকরণ করতে। যা ব্রাউজারের দুনিয়ায় ঝড় তুলেছিল এবং ব্যবহারকারীদের দেখিয়েছিল যে নতুন একটি বিকল্প বলে কিছু রয়েছে, আর ওয়েব তারা কিভাবে ব্যবহার করবে সেই বিষয়টির নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে দিয়েছিলো।
বর্তমানে, মোবাইল ওয়েব হুমকিতে রয়েছে, মাইক্রোসফটের দ্বারা নয়; নেতৃত্বস্থানীয় স্মার্টফোনগুলোর প্লাটফর্ম গুগল এবং অ্যাপল এর দ্বারা। তাদের ন্যাটিভ অ্যাপ্লিকেশন,লক করা প্ল্যাটফর্ম, প্রোপ্রাইটরি সফটওয়্যার স্টোর এবং ডেভলপারদের জন্য অবিন্যস্ত নিয়ম দ্বারা; গুগল আর অ্যাপল ওয়েব প্রযুক্তিকে অপ্রাসঙ্গিক করে ফেলছে। – থমাস ক্লেবার্ন
মোবাইলের প্রধান যে ক্ষেত্রের উন্নয়নের প্রয়োজন সেটা হচ্ছে অ্যাপ্লিকেশনের বহনযোগ্যতা বা portability…
মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ঘিরে যত ধরনের উত্তেজনা বা হুজুগ আছে, তার মধ্যে একটি বিষয় ব্যবহারকারীদের পেছনে আটকে রেখেছে: তা হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট অপারেটিং সিস্টেম এবং একটি নির্দিষ্ট ডিভাইসে একটি অ্যাপ্লিকেশন চলবে। অপরদিকে ওয়েবটি এত বেশি বিবর্তিত হয়েছিল যে এর কনটেন্ট যেকোন হার্ডওয়্যারে একইভাবে পারফর্ম করছিল।
মোজিলা, ফায়ার ফক্স ওয়েব ব্রাউজারের নির্মাণকারী, এই একই বিষয়টি স্মার্ট ফোনের উপযোগী করার জন্য বদ্ধপরিকর। – ডন ক্লার্ক
ফায়ারফক্স ওএস এর লক্ষ্য হচ্ছে, ওয়েব এর এই ন্যাটিভ যেকোন–স্থান–যোগ্যতা ব্যবহার করে এমন একটি প্লাটফর্ম উপহার দেওয়া, যা অ্যাপলিকশনকে উপযোগী করবে যেনো তা উপভোগ করা যায় একটি মোবাইল ডিভাইসে, ডেস্কটপ কম্পিউটারে, ট্যাবলেট অথবা যে কোনো কিছুতে যার একটি ব্রাউজার রয়েছে। আপনি কি চান না আপনার ডেস্কটপে অ্যাংগ্রি বার্ড যেখানে শেষ করেছিলেন মোবাইলে সেখান থেকে আবার চালু করতে? আমি অবশ্যই তা চাই।
(translator note: উপরের অংশ দ্বিতীয় কিস্তি ছিলো)
ডেভেলপারদের জন্য – হ্যাকিং এর স্বপ্ন
ফায়ারফক্স ওএস কেন প্রয়োজন, তার আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে এই মূহুর্তে আমাদের হ্যাকিং করার মত কোন মোবাইল প্লাটফর্ম নেই (আপনি চাইলে অ্যান্ড্রয়েডে কিছুটা কাস্টমাইজেশন চেষ্টা করতে পারেন কিন্তু এটি সহজ নয়)।
যেহেতু ফায়ারফক্স ওএস তৈরী হয়েছে এইচটিএমএল, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং সিএসএস এর সমন্বয়ে তাই আপনার শুধুমাত্র ওয়েব ডেভলপমেন্টের মৌলিক জ্ঞান থাকলেই এই ডিভাইসের অভ্যন্তরীন চেহারা বদলে দিতে সক্ষম হবেন। আপনি আক্ষরিক ভাবেই সিএসএস এর এক লাইনের একটি কোড পরিবর্তন করে হোমস্ক্রিন এ প্রদর্শিত আইকন পরিবর্তন করতে পারবেন অথবা জাভাস্ক্রিপ্টে কোন কোড সংযোজন করতে পারবেন যা ফোন–কল নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি সত্যিই ডেভেলপারদের জন্য নিবেদিত একটি প্লাটফর্ম এবং আমি খুবই উৎসাহী এটা দেখার জন্য যে তারা এটাকে মোজিলা‘র কল্পনা থেকে কত দূরে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
সঠিক সময়
আমি মোজিলাতে গত দেড় বছরে এটা অনুধাবন করেছি যে, ফায়ারফক্স ওএস প্রকল্পের শুরু থেকে থাকতে পেরে আমি কতটা ভাগ্যবান। যদি আমি ভুল না করে থাকি, আমার চাকুরীর প্রথম দু সপ্তাহের মধ্যেই অভ্যন্তরীন ভাবে এই প্রকল্পের (Boot to Gecko হিসেবে) ঘোষনা দেয়া হয়েছিল।
তখন থেকেই জিনিসগুলো খুব আকর্ষণীয় ছিল বটে কিন্তু ধীরে ধীরে এটা আরও রোমাঞ্চকর হয়ে উঠে। ফায়ারফক্স ওএস সত্যিকার অর্থেই একটি প্রথম সারির বিষয় যা নিয়ে আমি এই মূহুর্তে কাজ করছি এবং আমি নিঃসঙ্কোচে বলতে চাই – আমি এটিকে ভালবাসি, আসলে এই কাজের অংশীদার হতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।
মোজিলাতে কাজ করার সময় আমি অসংখ্যবার বিস্মিত হয়েছি যখন ফায়ারফক্স ওএস প্রাথমিকভাবে লঞ্চ করা হয়। আমি অনুভব করেছি – উত্তেজনা, আবেগ, স্নায়ুর চাপ এবং ব্যাখ্যা করতে না পারার যাতনা – “যে এটা কতটা চমৎকার এবং কেন সকলের অনুধাবন করা উচিৎ”।
সত্যি কথা বলতে, আমি মনে করি না যে সকলেই বুঝতে সক্ষম হবে ফায়ারফক্স ওএস এ আসলে ঘটছে, যতদিন পর্যন্ত না এটি সম্পূর্ণভাবে লঞ্চ করা হয়। আমার মতে, অনেকটা ফায়ারফক্সের মত।
আপাতত, মোজিলার ইতিহাসের একটি চমকপ্রদ সময়ে থাকতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।
প্রস্ফুটিত মন
এখন যারা এটি পাচ্ছে তারা হচ্ছেন কিছু ডেভলপার, যাদের কে মোজিলিয়ানদের বিভিন্ন ইভেন্টে এটার ডেমো ডিভাইস ব্যবহার করতে দেয়া হয়ে থাকে। আমি তাদের অনুভূতি এবং অভিব্যক্তি দেখে খুব মজা পাই, যখন তারা ওই ডিভাইস নিয়ে খেলা করে… যেমন:
- এটা শুরু হয়েছিল একটা হালকা গোলমাল থেকে —- অনেকটা এরকম “কেন তুমি আমাকে একটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস দিলে?”
- তারপরের অংশটি ছিল হঠাৎ বুঝতে পারা যে এটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস নয়, এটি জাভাস্ক্রিপ্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
- তার কিছু সময় পর উত্তেজনা শুরু হল অনেকটা এভাবেই “Holy shit!” এটা ছিল চমকপ্রদ মুহুর্ত
- বেশ খানিকটা সময় পর দেখা গেল তারা গভীর মনোযোগের সাথে ডিভাইসের প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ পর্যবেক্ষণ করছে এবং অসংখ্য প্রশ্ন করছে
- শেষ সময়টিতে দেখা গেল যখন আমি ডিভাইস ফেরৎ চাইলাম, তারা বলছে “আমি যা ভেবেছিলাম এটা তার অর্ধেক পরিমানও খারাপ নয়, আমি সত্যিই বিমোহিত!” এবং অনেকটা অনীহা নিয়ে তারা ডিভাইসটি ফেরৎ দিচ্ছে।
আপনি ভাবতে পারেন আমি বানিয়ে বলছি যাতে সবকিছু খুবই চমকপ্রদ মনে হয়, কিন্তু আমি সত্যিই এরকম হুবুহু প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলাম যাদেরকে আমি ডিভাইসটি দেখিয়েছিলাম। এটা আসলে খুব মজার ব্যপার ছিল।
আমি এতদিনে অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছি যে, আমি ফায়ারফক্স ওএস ডিভাইস যত বেশী মানুষকে ব্যবহার করতে দেখব তত আশ্বস্ত হব যে এটি সত্যিকার অর্থেই একটি গেইম–চেঞ্জার। এভাবে এটি আশেপাশের সকলের মন কাঁড়তে সক্ষম হবে, আমার কোন ব্যাখ্যা প্রদান করা ছাড়াই।
অসংখ্য চ্যালেঞ্জ
আমি যা নিয়ে কাজ করছি তার বাঁধা বিপত্তির সমাধান না করে ফায়ারফক্স ওএস এর মহিমা নিয়ে কথা বলাটা ঠিক হবে না।
একপাশে রয়েছে সাধারণ বিষয়, যেমন কিভাবে অ্যাপস ইকোসিস্টেম মেইনটেইন করতে হবে যা একাধারে মুক্ত ও সীমাবদ্ধ নয়, অথবা সম্ভাব্য ডিভাইসের ফ্র্যাগমেনটেশন যেমন অ্যান্ড্রয়েডের সাথে। এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমার কাছে এগুলো নীরস।
যাহোক, আমি আগ্রহী মোবাইল ডিভাইসে HTML5 গেইম চালনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে – গেইমকে হৃদয়ঙ্গম করা এবং পারফরমেন্স ইস্যু দুটো বিষয় যা নিয়ে ডেভলপাররা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন। এটা ফায়ারফক্স ওএসের জন্য কোন সমস্যাই নয় (অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস এর যেটা বড় সমস্যা) কিন্তু বর্তমানে আমি আমার পূর্ণ মনোযোগ দিচ্ছি কীভাবে এটিকে আরও উন্নত করা সম্ভব তার উপর।
এখন যা অবস্থা, মোবাইলের জন্য পূর্বে বিদ্যমান HTML5 গেইম হয় খুব খারাপ ভাবে চলে (০– ২০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড), অথবা কিছুটা ভালভাবে চলে (২০– ৩০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ড)। বেশীরভাগ সময়ই এই গেইমগুলো স্ট্যাবল ফ্রেম রেটে চলে না, যা গেইমের অনুভূতিকে খুব একটা আকর্ষণীয় করে না।
মজার বিষয় হল বেশীরভাগ সমস্যাই, এই ডিভাইস অথবা জাভাস্ক্রিপ্ট সম্পর্কিত নয়। কিছু ভারী গেইম রয়েছে, যেমন Biolab Disaster, যা ৫০ পাউন্ডের লো–এন্ড ডিভাইসে খুব ভালভাবে চলে যা আমি পরীক্ষা করছি – আমি ৪০ থেকে ৬০ ফ্রেম প্রতি সেকেন্ডের কথা বলছি।
এটা আমার কাছে পরিষ্কার যে, যদিও ডিভাইস এবং প্লাটফর্মকে মাঝে মধ্যে দোষারোপ করা হয় (সবসময় নয়), লো–এন্ড ডিভাইসে ভালোমত পারফর্ম করে এমন গেইম থেকেও আমাদের অনেক কিছু শিখার রয়েছে কি ধরণের কৌশল তারা অবলম্বন করছে এবং কীভাবে ডেভেলপারদের উত্তম পন্থায় তা শেখান সম্ভব যারা মোবাইল ডিভাইসে HTML5 কে লক্ষ করে কাজ করছে।
আমি সত্যিই বিশ্বাস করি অনেক ভারী HTML5 গেইম মোবাইল ডিভাইসে ভালোভাবে চালানো সম্ভব, এমনকি লো–এন্ড গুলোতেও। আমি কেন এ বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী? কারন মানুষজন ইতোমধ্যে এ ধরণের গেইম তৈরি করা শুরু করেছে। আমি আমার জীবনে দুটো জিনিসকে সবচেয়ে বেশী বিশ্বাস করি… আমার চোখ।
আমরা লক্ষে পৌঁছাব।
(translator note: উপরের অংশ তৃতীয় কিস্তি ছিলো)